কলা খাওয়ার উকারিতা, অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন

 কলা এমন একটা ফল যার গুনাগুন বলে শেষ করা যাবে না।   সারা পৃথিবীতে কলার অনেক সুপরিচিত রয়েছে। কলা একটি ইউনিক ফল। আবার এটি সুপার ফল হিসেবে চিনে সবাই। পৃথিবীতে এমন কোনো কারণ নেই যার গুনাগুন এক সঙ্গে পাওয়া যায়।

কিন্তু কলা এমন একটি কলা এমন একটি ফল  যার মধ্যে  সব গুনাগুন একসঙ্গে পাওয়া যায়। এবং কলা খেতেও অনেক সুসাধু। তাইতো কলাকে সবাই চেনে। অতি নগন্য একটি ফল কলা। চলুন ঝটপট জেনে নি কলার ১৩ টি উপকারিতা সম্পর্কে --

এক নজরে দেখে নেই -

আপনি কি শরীরের শক্তি পাচ্ছেন না ? তাহলে আর চিন্তা কিসের। ২টি কলা খেয়ে ফেলেন। আর মেজিক দেখেন। কি বিশ্বাস হচ্ছে না। তাহলে ট্রাই করে দেখুন। এর কারন হচ্ছে কলায় আপনার অনের পরিমানে গ্লুকোজ ও ফ্রকটোস রয়েছে যা আপনার শরীরে অজানা শক্তির যোগান দেয়।
শুধু তাই না এটি রক্তে মিশে যায় আপনার রক্তকে সচল রাখে।  আবার এতে যে ডায়েটরি ফাইবার আছে যা সুপার ফাস্ট গতিতে  গ্লুকোজ তৈরি করতে সাহায্য করে। ফলে শরীরে আরো এনার্জি ফিরে আসে।

হার্ট ভালো রাখতে কলা

কলাতে আছে অনেক পটাশিয়াম। যা হার্টকে পেশিবহুল রাখে। তার সঙ্গে মজবুত ও রাখে। এরপর মতিস্কের স্টোক হওয়া থেকে বিরত রাখে। হার্ট অ্যাটাক অনেকাংশে কমিয়ে আনে। ব্লাড প্রেশার হ্রাস করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কলা

আমরা জানি রক্তে সুগার বেশি থাকে। আর শর্করা বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে তা সহজেই শরীরে হজম করে রক্তে মিশে যেতে সাহায্য করে ও শর্করার পরিমাণ আরো বৃদ্ধি করে। এতে করে ডায়াবেটিসের পরিমাণ ও বাড়িয়ে দেয়। 
অন্যদিকে কম পাকা কলাতে যে রেসিস্ট্যান্ট শর্করা থাকে তা সহজে হাজাম হয় না অল্প করে হজম হয় আর রক্তে মিশে ফেলে। শর্করার মাএা ঠিক রাখে। তাহলে দেখছেন তো কলার কত গুন। আগেই বলেছিলাম না। মিলতো কথা। আরো কথা আছে শুধু পড়তে থাকুন।

কিডনি সুরক্ষা রাখতে কলা

কলায় রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম। যা অনেকটা কিডনিতে সুস্থ রাখে।গবেষণায় পরিলক্খিত হয়েছে যেসব ব্যক্তি দৈনিক একটি করে কলা খায় তাদের কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ার সম্ভাবনা ৪০ ভাগ কম। এবং কলা পেটে কিডনি পাথর হতে বাধা দেয়। সেই সঙ্গে মূএতন্তের ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা কমায় কলা। 

হজমে কলার কেরামতি 

চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে তা পর ৩০ মিনিট পর একটি পাকা কলা খেলে শরীরে দ্রুত খাবার হজম করতে  সাহায্য করে এবং ক্ষতিকর চর্বি অনায়াসে হজম করিয়ে দেয় । 
কারণ গলায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার যা ইতি হজম করতে সহায়তা সাহায্য করে সেই সঙ্গে কলায় থাকে পেটটিন নামক একটি ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো দূর পারে। 

আলসার ভালো রাখতে কলার অবদান 

আপনার পেটে যদি আলসার থাকে। তাহলে আর দেরি না করে খেয়ে ফেলুন কলা। এইক্ষেত্রে কলায় আছে মিউসিলেজ নামক এক ধরনের এনজাইম। যা পাকস্থলী ভেতরের ক্ষতিগ্রস্ত মিউকাস পর্দাকে সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। আর থাকে  পেকটিন নামক এক ধরনের ফাইবার। যা কোষ্ঠকাঠিনেও মতো বিরাট একটা সমস্যাকে দূরীকরণ করে রাখে। 

তারুণ্য ধরে রাখতে কলার মেটাবলিজম 

কলায় অন্যান্য উপাদান ও ভিটামিন কোষ থাকে যা অকালে কোষ ঝরে পড়া থেকে বাঁচায় এবং ত্বকে থাকা কোষের পানির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে ত্বককে আরও উজ্জ্বল এবং মসৃল দেখায়। এর মধ্য থাকা ভিটামিন যৌবন ধরে রাখতে সহায়তা করে। 

কালার ম্যাগনেসিয়াম ত্বকের কোলাজেন গঠনে সহায়তা করে যা ফ্রিরেডিক্যাল জনিত কারনে ত্বককে সূর্যের অতি রশ্মির  ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। 

ভিটামিনের আধার কলা

কলাতে রয়েছে A to Z ভিটামিন। একবার ভাবুন কলায় একমাত্র ফল যা খেলে আপনি এক সঙ্গে অনেক গুলো ভিটামিন পেয়ে যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে গুনাগুনও। তাই আর বাজার থেকে ভিটামিনের কৌটা আালাদা ভাবে কিনতে হবে না। এতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন রয়েছে।
 যেমন : ম্যাগনেসিয়াম , পটাশিয়াম , ভিটামিন বি , ম্যাঙ্গানিজ এবং ভিটামিন সি।

রক্ত বৃদ্ধি করতে কলা

কলাতে ভিটামিন বি - ৬ যা লোহিতরক্ত কনিকা সংখ্যা বেড়ায়। এর মধ্যে থাকা ক্যালশিয়াম হাড় মজবুত করে। ফলে হাড়ে রক্ত কনিকা সংখ্যা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে রক্ত স্বল্পতা হ্রাস করে

মানসিক চাপ কমাতে কলা

কলার এক গুরুত্বপূর্ন উপাদান ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো এসিড। যা রক্তে মিশে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে সেরাটোনিন নামক হরমোনে পরিনতি করে। আর এই সেরাটোনিন হরমোন আপনার মাইন্ড ফ্রেশ রাখে আপানার মনকে প্রফুল্ল রাখে। এবং আপনাকে শান্তির ঘুম এনে দেয়। এতে করে আপনি মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকেন। তাছাড়া এর মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম যা আপনাকে  বিষন্তা প্রতিরোধ করে। এভাবেই কলা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। 

কলা স্মৃতি শক্তি বাড়ায় 

প্রত্যহ একটি কলা আপনাকে আপনার স্মৃতি শক্তি ভান্ডার করে দেবে। কলার ভিতরে থাকা বিভিন্ন উপাদান আপনার মগজের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের জোগান দিয়ে থাকে। 
কলা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
কলায় প্রচুর ক্যারটিনয়েড নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আপনার শরীরে যাবতীয় ক্ষতিকর ভাইরাসকে ধ্বংস করে রোগ প্রতি রোধের ক্ষমতা বহুুগুনে বাড়িয়ে দেয় বা বৃদ্ধি করে। এবং ভিটামিন প্রজনন স্বাস্থ্য ভালো রাখে। 
কলায় ভিটামিন-এ প্রচুর রয়েছে যা চোখকে পরিষ্কার রাখে ফলে আপনার চোখেও জ্যােতি বেড়ে যায় এর ফলে আপনার দৃষ্টি শক্তি প্রকট হয়।

ওজন বাড়াতে ও কমাতে কলার ভেলকি

একদম পাকা কলা রোজ ২ টি এবং তার সঙ্গে ঘন করে পাতলা দুধ ২৫০ মিলি খেলে বা সেবন করলে মেজিকের মতো আপনার শরীরে দেহের ওজন বৃদ্ধি পায়। অন্য দিকে একটু কম পাকা কলা ২ - ৩ টি কয়েক মিনিট পর পর খেলে আপনার পেট ভরে যাবে। 
ফলে আপনার ক্ষুধা কম লাগবে তাই আপনার ওজন ও কমে যাবে। কম পাকা কলাতে রেসিস্যান্ট স্টার্চ পাওয়া যায় প্রচুর পরিমানে। তাই আমার মনে হয় ওজন কমাতে বেশি পাকা কলা না খেয়ে কম পাকা কলা খাওয়ায় ভালো হবে । 
এটি এক দিকে যেমন আপনার দ্রুত ওজন কমাবে অন্য দিকে আপনার শক্তিরো জোগান দেবে। এর ফলে আপনার শরীর দূর্বল না করে আরো সতেজ করে। আও প্রনব্যতন করে।

কলা ক্যান্সারের ঝুকি কমায়

আমাদের দেশে এখন ঘরে ঘরে ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা বাড়চ্ছে। তাই আপনারা যদি একটি বেশি পাকা কলা খান। তাহলে আপনাদের শরীরে TNF - A নামক যৌগ রয়েছে যা আপনার শরীরকে শেত্ব রক্ত কনিকার পরিমান বাড়ানোর পাশাপাশি রোগ প্রতি রোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে আপনার শরীরের ব্লাড ক্যান্সারের ঝুঁকির পরিমাণ অনেক অংশে কমিয়ে দেয়। 

কোন কলা বেশি উপকারী? 

বীজহীন সকল জাতের কলা প্রায় সমান উপকারী। যেমন ধরেন - এটে কলা , সবরি কলা ও বিচি কলা ঔষধি উপকারে লাগে। নিচে বিবরন থেকে জেনে আসি কোন কলার বেশি উপকার।

চম্পা কলা বা চাপা কলা উপকার

এর মধ্যে প্রচুর পরিমানে আশঁ থাকে যা আপনার পেট পরিষ্কার রাখে। মানসিক কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে সেই সঙ্গে মস্তিষ্ক সতেজ রাখে।

কাঁঠালি কলার উপকার

বাতের ব্যথা এবং স্বাভাবিক মাথা ব্যাথায় প্রাকৃতিক নিরাময় হিসাবে খুব ভালোভাবে কাজ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।   ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে। 
সিঙ্গাপুরি কলার উপকার 
এই সিঙ্গাপুরি কলা আয়রনের ভরপুর ফলে এটি রক্ত স্বল্পতা  দূর করে। সাথে সাথে দেহের পানি শ্বসন বৃদ্ধি করে। 

অনুপম কলার উপকার 

চর্বি হজমে সাহায্য করে। অনিদ্রা ভালো করে। মানসিক চাপ বা স্টপে কমায়। 

সাগর কলার উপকার

আমাদের গ্রামে প্রচলিত একটা কথা রয়েছে ঠান্ডা লাগলে বা কাশি হলে সাগর কলা খাওয়া যাবে না। আসলে ঠান্ডা বেশি লাগলে বা কাশ হলে কলার কোন সম্পর্ক নেই। বরণ কলার মধ্যে থাকা মিউসিলের ও পেকটিন কাশি নরম করে বের হতে সাহায্য করে। তবে শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমা আছে এমন রোগীর সাগর গলা না খাওয়াই ভালো। 

আঁটিয়া কলা বা বিচি কলার উপকার 

আমাদের বীজহীন কলা খেতে সবারই ভালো লাগে কিন্তু বীজ যুক্ত কলা খেতে গা গলায়। এটে কলা বা বিচি কলা ঔষধি গুনাগুন জানলে আপনি আজ থেকে খেতে শুরু করবেন। চলুন জেনে নেয়। সপরি কলা , বিচি কলা বা এটে কলা এসব বীজ যুক্ত কলায় প্রচুর পরিমানে রয়েছে নাইট্রোজেন , ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম। 
যা আপনার শরীরে স্বাস্থ্যকর টিস্যু গঠনে কাজ করে। এটে কলার ফুলপর রস আামাশয়, আলসার , ব্রংকাইটিস ও রান্না করা ফুল ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসায় ব্যাপক পরিমানে ব্যবহৃত হয়। গাছের কষ যুক্ত রস রক্তক্ষরণ বন্ধ , হিস্টেরিয়া , স্হায়ী আমাশয় , কুষ্ঠ , ডায়রিয়া , জ্বর ইত্যাদি রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। 
গাছের শিকর পরিপাক জনিত সমস্যার কারনে ও আমাশয়ে ব্যবহার হয়।







এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url