কুরবানির পশু নিয়ম, পদ্ধতি ও দোয়া
অন্যান্য
প্রথমে আপনাদের সালাম এবং ঈদুল আজহার অনেক অনেক সুভেষসা, অভিনন্দন এবং ঈদ মুবারক জানিয়ে শুরু করছি আজকের কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশা করছি এতে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন বলে, বলে আমি মনে করি। আসলে আপনাদের উপকৃত করাই স্ট্রবেরি ম্যাক্সের প্রধান উদ্দেশ্য। কাউকে কোন কিছু উপকৃত করতে পারলে নিজের অনেক ভালো লাগে। কারো উপকার করা এটাই আমাদের কাজ। তাহলে চলুন আমরা সেই কথাগুলো জেনে নেই।
আনন্দ ও ত্যাগের মহিমা নিয়ে হাজির ১০ই জিলহজ; পবিত্র ঈদুল আযহা।রাত পোহালেই বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদযাপিত হবে মুসলিম জাহানের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল আযহা। নামাজ আদায়ের পর সামর্থ্য অনুযায়ী কোরবানি করবেন মুসল্লিরা।
কোরবানি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত সূরা কাউসার এর আল্লাহ তাআলা কোরবানি নির্দেশ দিয়ে বলেন -----------'আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন '
১০ জিলহজ্ব ফজরের পর থেকে ১২ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে তাকে কোরবানি দিতে হবে।(দুররুল মুকতার, পৃষ্ঠা -- ২১৯, খন্ড: ৫)
'১০, ১১ ও ১২ জিলহজ ------- এই তিন দিন কোরবানি করা হয় যায়। তবে প্রথম দিন কোরবানি করা অধিক উত্তম। এরপর দ্বিতীয় দিন, তারপর তৃতীয় দিন।' ( রদ্দুল মুহতার: ৬/৩১৬) জিলহজ মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পর কোরবানি করা শুদ্ধ নয়। ( ফতোয়ায়ে আলমাগরি: ৫/২৯৬)
একইভাবে নামাজের আগে কোরবানি করা বৈধ নয়। অবশ্যই যে স্থানে বা জুমার নামাজ বৈধ নয়, ১০ ফজরের নামাজের পরও কুরবানী করা যায় জায়েজ। (কুদুরি, পৃষ্ঠা- ১৯৮)
নিজের কোরবানির পশু নিজ হাতে জবাই করা মুস্তাহাব। যদি নিজে জবাই করতে না পারে তবে অন্যের দ্বারা জবাই করাবেন। এ অবস্থায় নিজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম। (ফতোয়ায়ে শামি: ৫/২৭২) নিজ হাতে কোরবানির পশু জবাই
জবাই করার আগে ছুরি ভালোভাবে ধার দিয়ে নেওয়া মুস্তাহাব। কোরবানির পশুকে এমন ভাবে জবাই করা উচিত কোন প্রকার অপ্রয়োজনীয় কষ্ট না হয়। ঠিক এমনিভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন স্থানে জবাই করা উচিত বা উওম। জবাই করে ব্যক্তির সঙ্গে যদি কেউ ছুরি চালোর সাহায্য করে, তার জন্য ও 'বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার ' বলা ওয়াজিব। (হেদায়া : ৪/৪৩৮ ; ইমদাদুল ফতোয়া : তিন /547, ফতোয়ায়ে শামি: ৯/৪৭৩)
জবাই করার সময় কোরবানির পশু কেবলামুখী করে সোয়াবেন। অতএব 'বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার ' বলে জবাই করবেন। ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ পরিত্যাগ করলে জবাইকৃত পশু হারাম বলে গণ্য হবে। আর যদি ভুলক্রমে বিসমিল্লাহ ছেড়ে যায় তবে তা খাওয়া জায়েয আছে। ( হেদায়া: ৪/৪৩৮)
পশু জবাই করার সময় মুখে নিয়ত করা জরুরি নয়। অব্যশ মনে মনে নিয়ত করবে যে আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি করছি। তবে মুখে দোয়া পড়া উত্তম। ( ফতোয়ায়ে শামি : ৫/২৭২)
জবাই করার সময় রগ কাটা জরুরি ; (কন্ঠনালী, খাদ্যনালী ও দুই পাশের মোটা রগ, যাকে বলা হয় ওয়াজদান। এই চারটি রোগের মধ্যে যে কোন তিনটি কাটা হলে কোরবানির শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি দুটি কাটা হয় তবে কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (হেদায়া : ৪/৪৩৭)
কোরবানির পশু কেবলামুখি হয়ে শোয়াতে হবে এবং এই দোয়াটি পাঠ করতে হবে-----
ইন্নি ওয়াজ জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাজি ফাতারাজ সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানাফিও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্নি সালাতি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারীকা লাহু ওয়া বিজালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন। আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়ালাকা ( আবু দাউদ : 201795)
এই দোয়া পাঠ করার পর 'বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার 'বলে সবাই করতে হবে। পশু জবাই করার পর পাঠ করতে হবে ---
আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মদ ও খালিলিকা ইবরাহিম। ' যদি একাধিক ব্যাক্তি মিলে কোরবানি করে তবে ' মিন্নি' র স্হলে ' মিন্না' পাঠ এবং শরিকদের নাম পাঠ করবে। তবে তাদের নাম শুধু নিয়ত করলে হবে
কোরবানি করার সময় এই দোয়া ও পাঠ করা যাবে-------------
' বিসমিল্লাহ, ওয়াল্লাহু আকবর, আল্লাহুমা হাজা মিনকা ওয়া লাকা, হাযা আন্নি। আল্লাহুমা তাকাব্বাল মিন… ওয়া আলি … ডট দেওয়ার স্হানে কোরবানির নাম উল্লেখ করবেন।
তবে, এসব দোয়ার মধ্যে কোরবানির সময় শুধু ' বিসমিল্লাহ' বলা ওয়াজিব। বিসমিল্লাহি আল্লাহুআকবর বলা উত্তম। এর অতিরিক্ত যে কথাগুলো আছে সেগুলো বলা মুস্তাহাব, ওয়াজিব বা জরুরী কিছু নয়। আল্লাহ তায়ালা মুসলিমকে উম্মাকে সুন্নতের অনুসরণে সঠিক নিয়মে কোরবানি করার তৌফিক দান করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url